ববির সকল সমস্যা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন ববি উপাচার্য, খুব শীঘ্রই এর সমাধান


স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১৪, ২০২৪, ১:৫৭ পূর্বাহ্ন /
ববির সকল সমস্যা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন ববি উপাচার্য, খুব শীঘ্রই এর সমাধান

মুনতাসির রাহী, ববি প্রতিনিধি

সম্প্রতি রুটিন দায়িত্ব থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের পূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। রুটিন দায়িত্বে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বেশ কিছুদিন কাজ করেছেন। এখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির পূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে বেশ উৎফুল্ল। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য কাজ করতে চান। ইতিমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপও নিয়েছেন তিনি। উদ্যোগ নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন সমস্যা-সঙ্কট সমাধানেরও।এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তরে তিনি জানান,,

আপনি রুটিন দায়িত্বে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। এখন ৪ বছরের জন্য পূর্ণাঙ্গ দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন। এ নিয়ে আপনার অনুভূতি কেমন?

:-“আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে চার বছরের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এর ট্রেজারের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার হিসেবে যোগদান করি। দুই বছর ট্রেজারের দায়িত্ব পালন করার পর মাননীয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালের ৮ ই নভেম্বর আমাকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৪ মার্চ মাননীয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আমাকে পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য হিসেবে এই চেয়ারে বসান।
আমাকে এই দায়িত্ব পালন করার সুযোগ করে দেওয়ায় আমি খুবই খুশি, আমি আমার মেধা ও মনন দিয়ে তার যথেষ্ট মূল্যায়ন করব।”

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার ভাবনা কি?

:-“বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে অত্যন্ত মেধাবী, যোগ্যতা ও দক্ষতাসম্পন্ন।তাদের পরিচালনার জন্য দরকার দক্ষ নেতৃত্ব। এই নেতৃত্বের জায়গাটা আমি পূরন করবো। এই বিশ্ববিদ্যালয় যেন অদূর ভবিষ্যতে সারা বাংলাদেশসহ বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারে সে লক্ষ্য কাজ করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও সম্মান বৃদ্ধি পায়, একাডেমিক কার্যক্রম আরো বেগবান হয় সেই লক্ষ্য কাজ করবো। এজন্য আমি বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করবো। সকলের সাথে সমন্বয় করে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আমি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।”

কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিতে বলছেন সবাই। এক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়?

:-“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বারবার কর্মমুখী শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। আমি তাদের আদর্শ অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মমুখী শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবো। আমরা একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানার সমন্বয় স্থাপন করার। এজন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা, সভা ও সেমিনার আয়োজন করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো অনেক সমস্যা-সঙ্কট রয়েছে। বিশেষ করে ক্লাসরুম ও শিক্ষক সংকট প্রকট। এ সমস্যা সমাধানে কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

:-“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে একটি পরিপত্র জারি করেছেন। পরিপত্রে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষ, শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সকল ধরনের সংকট জানতে চেয়েছন। আমরা আমাদের সংকটসমূহ লিখে চিঠি পাঠিয়েছি। অতি শীগ্রই দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখতে পাবরবেন।”

আবাসনেরও ব্যাপক সঙ্কট রয়েছে। সংকট নিরেশনে আপনি কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন?

:-“আবাসিক সমস্যা সমাধানে হল নির্মাণের জন্য ইউজিসি বরাবর চিঠি দিয়েছি। আশাকরি অতি শীগ্রই একটি দশ তলা হল নির্মিত হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধনে আপনার কি পদক্ষেপ থাকবে?

:-“বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি একটি কেন্দ্রীয় বর্জ্যগার স্থাপন করেছি। আগে যেসব জায়গায় ময়লা ফালানো হত সেসব জায়গাও পরিষ্কার করে ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে একটি মনোরম ফুলের বাগান তৈরী করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের আলো স্বল্পতা দূরীকরণের জন্য পর্যাপ্ত লাইটিং এর ব্যবস্থা করেছি।আমাদের বাজেট স্বল্পতা থাকা স্বত্তেও যতটা সম্ভব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। “

বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল সেন্টার নেই,মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত জনবল ও যন্ত্রপাতি নেই, প্রয়োজনীয় ওষুধও পাওয়া যায় না…

:-“বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্নাঙ্গ মেডিকেল সেন্টার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের তিনজন ডাক্তার সার্বক্ষণিক থাকেন। সাধারণভাবে তারা ৯ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত অফিস করতেন, আমি ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে রাত ৯ টা পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া অতি শিগ্রই সেবিকা নিয়োগ দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত পরিমান ঔষধ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি।”

রুটিন দায়িত্বে থাকাকালীন আপনি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, এখন সেগুলো অব্যাহত থাকবে কিনা?

:-“রুটিন দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে বাজেট সংকটসহ নানা ধরনের চাপ ছিলো। তাই ইচ্ছে থাকা স্বত্বেও অনেক কাজ করতে পারিনি। এই ধরনের ইতিবাচক কাজগুলো এখন আরো বেগবান হবে।”

শিক্ষার্থীদের প্রতি আপনার বিশেষ কোনো বার্তা বা পরামর্শ দিতে চান কিনা?

:-“শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য আমার বার্তা, তাদের জীবনটা অত্যন্ত মূল্যবান। তাদের অবিভাবকরা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত এর অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। সঠিক গন্তব্য পৌঁছাতে হলে অযথা সময় নষ্ট না করে, পোডাক্টিভ কাজে সময় দিতে হবে এবং প্রচুর পরিশ্রমী হতে হবে। তোমরা তোমাদের মেধার পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছো,এখন সময়টাকে কাজে লাগাও,পড়াশোনা করো।যেকোনো সমস্যা হলে আমার কাছে বা তোমাদের প্রক্টর মহোদয়ের কাছে এসে পরামর্শ নাও। তোমরা কোথায়ও ভোগান্তিতে পড়লে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবে। আমরা সেটা সমাধানে যথাযথ চেষ্টা করব।”