মো:আল আমিন খান স্টাফ রিপোর্টার, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী
বুকবাঁধা স্বপ্ন নিয়ে
মাঠে তরমুজের বীজ বুনেছে চাষি। প্রত্যাশা ছিল রোপিত বীজের ফলন ভালো হবে। কিন্তু সেই আশার আলো ফিকে হয়ে গিয়েছে ফসলের মাঠে নির্ণয় না করা অজানা রোগে। বাসা বেঁধেছে জানা-অজানা ক্ষতিকর পোকাও। ধারদেনা আর ঋণ নিয়ে উচ্চ ফলনশীল ফসল তরমুজ আবাদ করছেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চাষিরা। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে চাষিদের দুশ্চিন্তার কারণ খুঁজেছে কৃষিবিভাগ। আক্রান্ত গাছ ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করে পাঠিয়েছে গবেষণা কেন্দ্রে। সেই নমুনা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে ৩টি রোগ চিহ্নিত করেছে বৈজ্ঞানিকরা।
আক্রান্ত গাছ ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করে বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পাঠানো হলে সেখানকার বৈজ্ঞানিকরা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে ‘গামি স্টেম ব্লাইট, ঢলে পড়া ও বাড নেক্রসিস ভাইরাস’ নামের রোগ চিহ্নিত করেছেন। এ সমস্যা সমাধানের জন্য নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। তরমুজ চাষিরা বলছেন, বীজ বপনের পরে যখন গাছ দেড় থেকে দুই হাত প্রসারিত হত এরপরে গাছের মাথা হলুদ হয়ে যেতো।
এরপরে ফল আসলে গাছ মারা যায়। একেক সময় একেকজন কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহার করতে বলেলও সেই চিকিৎসার সুফল পাননি। এক্ষেত্রে স্থানীয় জ্যেষ্ঠ চাষিদের পরামর্শ নেয়া হতো। প্রথম দিকের অনেক গাছ মারা গিয়েছে। এখন যে গাছ রয়েছে আবহাওয়া অনুকূলে আর বাজারদর ভালো থাকলে ক্ষতি পোষাবে। তরমুজ আবাদের অন্যতম ভরসা দাদন, ধারদেনা ও ঋণের টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর শুরুর দিকে তরমুজ গাছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। প্রাথমিকভাবে কিছু সমস্যা চিহ্নিত করলেও অধিকতর গবেষণার জন্য বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে আক্রান্ত জমির থেকে কিছু নমুনা পাঠিয়েছি। সেখান থেকে আমাদের তিন ধরনের সমস্যার কথা জানানো হয়। গবেষণা দেয়া পরামর্শ কৃষকদের মাঝে প্রচার করেছি। একই জমিতে বছরের পর বছর তরমুজ আবাদ করার কারণে রোগ এবং পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। ফলে গাছ সহজেই আক্রান্ত হয়েছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি তারা যেন এক জমিতে বছরের পর বছর একই ফসল চাষ না করে ভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে। এক্ষেত্রে কৃষকরাও আশ্বস্ত করেছে তারা শষ্য পর্যায়ের ফসল চাষ করবেন। বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র কুণ্ডু বলেন, যে কৃষক হাইব্রিড বীজ দিয়ে তরমুজ আবাদ করবে তার বীজ রাখা যাবে না। একই জমিতে বারবার তরমুজ আবাদ করার কারণে মাটিসহ তিন ধরনের সমস্যার কারণে গাছ মারা যাচ্ছে। এজন্য যেই জমিতে রোগ দেখা দেয়, সে জমিতে পরবর্তী দুই বছর দানাদার জাতীয় ফসল চাষ করতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :