বেইলি ট্রাজেডি: মানিব্যাগে আইডি কার্ড দেখে মিললো জবি শিক্ষার্থীর পরিচয়, উপাচার্যের শোক


স্টাফ রিপোর্টার প্রকাশের সময় : মার্চ ১, ২০২৪, ৩:৩৯ অপরাহ্ন /
বেইলি ট্রাজেডি: মানিব্যাগে আইডি কার্ড দেখে মিললো জবি শিক্ষার্থীর পরিচয়, উপাচার্যের শোক

রিপন আল মামুন, (জবি প্রতিনিধি)

বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মৃত্যুবরণ করেছেন। তার নাম মো. নুরুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের এমবিএ প্রফেশনাল প্রোগ্রামের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

নুরুল ইসলামের মানিব্যাগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড পাওয়ার পর তার পরিচয় জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, আমি খবর পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালানো শুরু করি। সে আমাদের নিয়মিত শিক্ষার্থী না, প্রফেশনাল প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী। এজন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে তার যোগাযোগ একটু কম।

তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাসাধ্যভাবে নিহতের পরিবারের পাশে থাকব।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা পর আহত ও নিহতদের নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজে। এ সময় নুরুল ইসলামের মানিব্যাগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড পাওয়া যায়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।

এছাড়াও বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ব্যাপক সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন বলেন, নুরুল ইসলাম আমার সরাসরি ছাত্র ছিলেন। সে পাস করে বেরিয়ে গিয়েছে। তার এমন মৃত্যুতে আমি ও আমার বিভাগ খুবই মর্মাহত। মুহুর্তের মধ্যেই যেন তাজা প্রাণ ঝরে গেলো। নুরুল ইসলামের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।

শোক প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে দেশ অনেক তাজা প্রাণ হারিয়েছে। অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার জন্যই এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা বারবার ঘটে। নুরুল ইসলাম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার এই অকাল মৃত্যু আসলেই মেনে নেয়া যায় না। দেশ একজন সুযোগ্য নাগরিককে হারালো। শোকার্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

বেইলি রোডের ভবনটিতে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুনের খবর পেয়ে ৯টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে যায় বাহিনীর প্রথম ইউনিট। ১৩টি ইউনিট রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতে আগুনের ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৫ নারীসহ ৭৫ জনকে। এ ছাড়া তিনজনকে মৃত ও ৪২ জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ অগ্নিকাণ্ডে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত একই পরিবারের পাঁচজনসহ মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ জন। এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। ছয়জনের পরিচয় মেলেনি।