আল্লাহ তায়ালা সমস্ত মাখলুকের চেয়ে মানবজাতিকে সর্বোত্তম বলেছেন ,আল্লাহ তাআলা আমাদের শ্রেষ্ঠ উম্মত বানিয়েছেন, সুন্দর আকৃতিতে আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাইতো পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি (আল্লাহ) মানুষকে সৃষ্টি করেছি সুন্দরতম গঠনে।’ (সুরা: ত্বিন, আয়াত নং : ৪)
এ সুন্দর গঠন , আকৃতি আল্লাহ প্রদত্ত আমানত ও নেয়ামত। আল্লাহ তায়ালার এই মহান নিয়ামতকে কৃত্রিম উপায়ে বিকৃতি সাধন করা চরম ঘৃণ্য কাজ।
শয়তানের এই জঘন্য ফাঁদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আগেই সতর্ক করেছেন। এবং আল্লাহর আদেশ মানার পরিবর্তে যে বেতিক্রম করবে, সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে মর্মে সাবধান করেছেন ।
সূরা নিসার ১১৮-১৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন , আল্লাহ তাকে (শয়তানকে) অভিসম্পাত করেছেন এবং সে (শয়তান) বলেছে, আমি তোমার দাসদের এক নির্দিষ্ট অংশকে (নিজের দলে) গ্রহণ করবই। এবং তাদের পথভ্রষ্ট করবই; তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করবই, আমি তাদের নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা পশুর কর্ণচ্ছেদ করবেই এবং তাদের নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবেই। আর যে আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে, নিশ্চয় সে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
হাদিসেও এ ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করা হয়েছে এবং যারা আল্লাহর সৃষ্টিতে বিকৃতি ঘটায় তাদের অভিসম্পাত করা হয়েছে।
হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) এমন সব নারীর ওপর অভিসম্পাত করেছেন, যারা অঙ্গে উল্কি আঁকে ও অন্যকে দিয়ে উল্কি আঁকায় এবং সৌন্দর্যের জন্য ভ্রুর চুল উপড়ে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে (তিরমিজি : ২৭৮২) ।
আমাদের জন্য সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, সম্প্রতি ট্রান্সজেন্ডার তথা বিশেষ অস্ত্রোপচার ও হরমোন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করে স্রষ্টার সৃষ্টিতে বিকৃতি করার বিষয়টি প্রকট আকার ধারণ করেছে।
বিভিন্ন মাধ্যমে তারা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। সরকারের কাছে নানারকম দাবি উত্থাপন করছে। শুধু কর্মসংস্থানের দাবি নয়, জাতীয় সংসদে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব দেখতে চান, এমন দাবিতেও পথে নামছেন এই কমিউনিটির মানুষেরা।
ট্রান্সজেন্ডার বিষয় নিয়ে অনেকের কাছে মনে হতে পারে, এতে সমস্যা কী, সবাই তো আর এক রকম হয় না। ওদের সংখ্যা টাই বা কত । তারা তো আমাদের ক্ষতি করছে না । কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
ইদানীং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম , বিভিন্ন জায়গায় ‘ট্রান্সজেন্ডার’ মানুষ নিয়ে আলোচনা হতে দেখা যায়, যাদের বেশির ভাগ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ মনে করলেও মূলত তারা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ নয়। বরং তারা বিশেষ অস্ত্রোপচার ও হরমোন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে রূপান্তরিত লিঙ্গের ব্যক্তি, যারা মানসিক দিক থেকে তাদের সৃষ্টিগত লিঙ্গের চেয়ে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বেশি আসক্ত ছিল। ফলে একসময় তারা অস্ত্রোপচার ও হরমোন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নিজেদের দেহের লিঙ্গের পরিবর্তন করে বিপরীত লিঙ্গের বেশ ধারণ করেছে।
বিশ্বের বিখ্যাত বিলিনিয়ার ইলন মাস্ক ট্রান্সজেন্ডার মতাদর্শের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন। এবং এই বিষয়ে তিনি মাঝে মাঝে সোস্যাল মিডিয়াতে পোস্ট দিয়ে পিতামাতা ও পরিবারকে সচেতন রাখেন। এই বিষয়টির ভয়াবহতা অনুধাবন করাতে ২০২৩ সালে তিনি একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি (what is a woman) শেয়ার করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বের ১৭০ মিলিয়ন মানুষ ভিডিওটি দেখেছিলো।
ইসলামের দৃষ্টিতে ট্রান্সজেন্ডার সম্পূর্ন হারাম । সে বিষয়ে মিশকাত শরীফের ৪৪২৯ নং হাদীসে বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ পুরুষদের মধ্যে নারীর বেশ ধারণকারীদের এবং নারীদের মধ্যে পুরুষের বেশ ধারণকারিণীদের অভিশাপ দিয়েছেন।
আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে এই ঘৃণ্য কাজ থেকে দূরে থাকার এবং এই ধরনের ফিৎনা থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন। আমিন
লেখক : মো:ছালিম আহমদ খান
প্রতিষ্ঠাতা : হাফিজ সোসিয়াল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন
আপনার মতামত লিখুন :